প্রথম এবং দ্বিতীয় ইয়ারের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট দের জন্য গাইডলাইন।

টেক্সটাইলে যারা এখনো পড়াশুনা করতেছো বা পড়ার ইচ্ছা আছে , বা পরিচিত কাউকে ভর্তি করানোর ইচ্ছা আছে অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না কি করা উচিত। ৪ টা বছর দেখতে দেখতে চলে যায় কিন্তু শেখা, জানার বাকি থাকে অনেক কিছু । এই প্রতিযোগিতার বাজারে কিভাবে একটু এগিয়ে থাকবে তার জন্য আমার পারসোনাল কিছু  টিপস ।মানা না মানা তোমাদের নিজস্ব ব্যাপার ।এটা ২ পর্বে প্রকাশ করব । আজকেরটা প্রথম ২ বছর নিয়ে

ভর্তি হওয়ার পরে সবাই একটু রিল্যাক্স হয়ে যায় । দেখতে দেখতে ৪ মাস চলে যায় বুঝে ওঠার আগেই ।ফলাফল রেজাল্ট খারাপ ।ম্যাক্সিমাম রি-টেক প্রথম বছরেই হয় ।তারপরে বুঝতে শেখে কিন্তু রি-টেক সাবজেক্ট টানতে যেয়ে বাকি গুলো সাবজেক্ট ও খারাপ করে।ফলে অনেকই উৎসাহ হারিয়ে ফ্যালে।তাই প্রথম থেকে একটু সাবধান হলে এই সমস্যাই পড়তে হবে না ।আমি সারাদিন পড়াশুনার কথা বলি নাই, সাবধান হওয়ার কথা বলেছি।

ভার্সিটির ল্যাপটপের আশায় না থেকে শুরুতেই একটা ল্যাপটপ কেনা উচিত। কারন ম্যাক্সিমাম কাজ অনলাইনে।তুমি খারাপ ছাত্র, ইংলিশ ভালো বোঝো না, ম্যাথে দুর্বল ,ফিজিক্স ভয় লাগে, ক্যামিস্টি কথা বাদ ই দিলাম ।প্রথম কথা তুমি খারাপ ছাত্র হলে ইন্টারে সাইন্সে সব সাবজেক্ট পাশ করতে না ।আমার কাছে এখোনো মনে হয় ৪ বছরের পরার থেকে ইন্টার অনেক বেশী কঠিন ছিল ।সব একই , এখন সুধু ইংরেজীতে ।আর এর জন্যে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া উচিত না। সারাদিন সর্বচ্চ ৩ টা ক্লাস থাকে।ক্লাস করে ইচ্ছা মত আড্ডা দেও।ক্লাস করলে অনতত বুঝতে পারবে চলতেছে কি .! ক্লাস শেষে স্যার লেকচার শীট দিলে বা স্লাইড দিলে ওইদিন ই ফটোকপি করে নিজের কাছে রাখ , পড়তে বলি নাই ওইদিন ই।এতে পরিক্ষার আগের রাতে অন্তত সব গোছানো থাকবে।

সব সাবজেক্টের জন্য একটা খাতা রাখো।ক্লাসে ছোট ছোট সজ্ঞা , ম্যাথ এক খাতায় রাখো । পেজের উপরে ডেট দিয়ে সাবজেক্ট লিখে রাখো । অনেকে ক্লাসে একটা পেজ কারর কাছ থেকে ছিরে নিয়ে ক্লাস করে । এটা ঠিক না ।পড়ে এই পেজ খুঁজে পাবে না । তার থেকে কেউ সুন্দর করে নোট করলে তার থেক ফটোকপি করে শীট আকারে নিজের কাছে রাখো।

ভর্তির পর মনে রাখবে তোমার উপরে ১১ সেমিষ্টারের বড় ভাই আছে আর তুমি বের হতে হতে আরো ১১ সেমিষ্টারের ছোট ভাই পাবে । আর সাথে তোমার ব্যাচ ।এই ২৩ সেমিষ্টারের বিশাল এক সার্কেল বানানোর সুজোগ আছে আর সুজোগটা কাজে লাগানো উচিত । খোঁজ নেও ক্লাব আছে কিনা, ক্লাবে কি কি হয়?  কে কে আছে? সেমিনার গুলোতে এটেন্ড কর।প্রথম বছরে এগুল করলে ৪ বছর পর ইন্টারি-জব নিয়ে অন্তত বড় ভাই খুঁজতে হবে না।

এসাইনমেন্ট, প্রেজেনটেশনের কাজ নিজে করার চেষ্টা কর।প্রথম সেমিষ্টারে স্যার রা এগুলোতে একটু কমপ্রোমাইজ করে।তাই ভুল করলেও শেখার সুজোগ আছে ।আর একবার পরের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেলে ৪ বছর পর ও তুমি নিজে করতে পারবে না ।আর এক সময় তোমাকে কেউ গ্রুপেও নিতে চাইবে না।আর এসাইনমেন্ট , প্রেজেনটেশন নিয়ে আলাদা ভাবে লিখব।

প্রথম সেমিষ্টের পর চেষ্টা করবে সবাই যেন একই সেকশনে থাকতে।এতে ইন্টারনাল বন্ডিং বাড়ে ।নিজেদের ফেসবুকে একটা গ্রুপ খুলে নিবে আর সমস্ত ইনফরমেশন , সাজেশন , লেকচার শীট , স্লাইড শেয়ার করবে । এতে ৪ বছর পর তোমার পড়াশুনা শেষ হয়ে গেলেও ডকুমেন্টস গুলো আজীবন থাকবে।

চেষ্টা করবে বছরে অন্তত একবার যেন কোথাও সবাই মিলে ট্যুর দেওয়ার।৪ বছরে ৪ টা জায়গা অন্তত দেখতে পারবে।কারন জবে একবার ডুকে গেলে আর পারবে না।এক্ষেত্রে সবার ই আগ্রহ থাকা উচিত।ট্যুরের আগে সবাই থাকলেও ঠিক ট্যুরের সময় সবার অজুহাত শুরূ হয়ে যায়। আমরা নিজেরাই ৪ বছরে একটা বড়ট্যুর দিতে পারি নাই।

ল্যাব ক্লাস কোন ভাবেই মিস করা উচিত না।হয়ত একদিনে কিছু শিখতে না পারলেও ৫ টা পার্টসের নাম জানবা। এমন ও তো হতে পারে জব ইন্টার্ভিউতে  ওই মেশিনের ৫ টা পার্টের নাম ই জানতে চাইল।

সেমিষ্টারের লাষ্ট ক্লাসের প্রেজেনটেশনে কিছু হাল্কা খাওয়ার আয়োজন কর।বাকি শিক্ষকদের দাওয়াত দেও।হালকা গান-অভিনয় করতে পার।এতে পরীক্ষার আগে শিক্ষকদের সাথে ভাল একটা সম্পর্ক তৈরি হবে।আর তোমরাও একটু মেন্টাল রিফ্রেশমেন্ট পাবে।

আপাতোতো আর মাথায় আসছে না। কারর এর থেকে আইডিয়া থাকলে শেয়ার করতে পার ।২ পর্বে এ্যাড করে দিব।সবার জন্যে অনেক শুভ কামনা ।টেক্সটাইল বাদেও অন্য ডিপার্টমেন্ট এগুল ফলো করতে পার।প্রথম বছরে অনেক ডিসিশন নিলে পরের বছরে আর নতুন করে শুরূ করতে হয় না। সবাই এ্যাডজাষ্ট হয়ে যায়।মোট কথা সব কিছু মিলিয়ে ইউনিভার্সিটি জীবন , শুধু পড়াশুনা করাও না অথবা শুধু ইনজয়মেন্ট ও না।

লিখেছেন : ফয়সাল শরীফ
২৩ ব্যাচ ড্যাফোডিল টেক্সটাইল
সেন্ট্রাল প্লানিং অফিসার, ইপিক গ্রুপ

1 comment:

Powered by Blogger.