আমরা সবাই স্পিকার।
....G. Sumdany Don
আমি আজকেই লিঙ্কড ইন এ কমপক্ষে ৫ টি প্রোফাইল দেখলাম যেখানে তারা নিজেদেরকে ট্রেইনার বা মটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে দাবি করছে। এবং কিছু প্রোফাইল দেখে আমি খুবই আশ্চর্য হলাম, কেন জানেন? ট্রেইনার বা মটিভেশনাল স্পিকার হওয়ার যে সকল গুন এবং দক্ষতা থাকার দরকার তা না থাকাতেও দিব্যি তারা নিজদেরকে সেরূপ দাবি করছে! তাই যে সকল গুন এবং দক্ষতা থাকার দরকার বলে আমি মনে করি তা আপানদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
১। শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ একজন ট্রেইনার এর জন্যে একটি ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া অথবা মধ্যম কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিসটিনকশন রেজাল্ট থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সেটা নাও হয়, তবে তার ভাণ্ডারে থাকা উচিত বাড়তি কোন প্রেফেসনাল ডিগ্রী, অথবা ইন্টারন্যাশনাল সার্টিফিকেশন যা তার যোগ্যতাতে ভ্যালু অ্যাড করবে। যদি এর কোনটাতে ঘাটতি থাকে তাহলে নিচের বিষয়গুলো দিয়ে ব্যালেন্স আনা যেতে পারে।
২। কাজের অভিজ্ঞতাঃ কোন কর্পোরেট চাকরি অভিজ্ঞতা ছাড়া কর্পোরেট ট্রেইনার হওয়া কষ্ট সাধ্যের ব্যাপার। অফিস পলিটিক্স বাস্তবে দেখা, কঠিন বসকে ম্যানেজ করা, কর্পোরেট পলিসি বা লিগাল ইস্যুগুলো বোঝা, নিজের টিমের লোকজনদের ম্যানেজ করা ইত্যাদির উপায় পাঠ্যপুস্তকে পাওয়া যায়না, এর জন্যে বাস্তব অভিজ্ঞতাই একমাত্র উপায়। এর সাথে দেখা উচিৎ যে অভিজ্ঞতা কত বছরের? কোন ধরণের প্রতিষ্ঠান, লোকাল নাকি মাল্টিন্যাশনাল এই বিষয়গুলোও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাথে সাথে প্রতিষ্ঠান, পজিশন এবং বস বা মেনটর কে ছিল সেটাও ভূমিকা রাখবে।
৩। অসম্ভব ভাল পাবলিক স্পিকিং ক্ষমতাঃ মটিভেশনাল স্পিকার হোক অথবা ট্রেইনার, মূল কাজটা হছে মানুষের সাথে কথা বলা এবং সারাটা সময় তাদের মনোযোগ ধরে রাখা। এবং তার জন্যে প্রয়োজন পরিপূর্ণ পাবলিক স্পিকিং এর দক্ষতা। আমি এমন অনেককেই চিনি যারা শিক্ষা-দীক্ষা, অভিজ্ঞতায় অনেক এগিয়ে কিন্তু কথা বলার দক্ষতার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পরেন। কথা বলার সময় নানান স্টোরি, বিভিন্ন থিওরি এর বাস্তব প্রয়োগ, পার্সোনাল এবং প্রফেশনাল অভিজ্ঞতা, গেমস এবং অ্যাক্টিভিটি এর মাঝে ব্যালেন্স এবং সমন্বয় ঘটিয়ে অডিয়েন্স কে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে না পারলে নিকেজে স্পিকার, মটিভেশনাল স্পিকার, ট্রেইনার দাবি করার আগে একটু ভেবে দেখা উচিত।
৪। বলার মত গল্পঃ হয়ত আপনি প্রতিষ্ঠিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হননি, অথবা অভিজ্ঞতার দিক থেকেও কিছুটা পিছিয়ে। সেটা হতেই পারে, কিন্তু একজন স্পিকার হিসেবে মানুষের মাঝে স্থান করে নিতে আপনার বলার মত একটি গল্প থাকতে হবে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে যারা নিজেদের জীবনের গল্পের কথা জানিয়ে মানুষের জীবনে ভ্যালু অ্যাড করতে পারে। যদি আপনার গল্প অন্যকে নির্দেশনা দেয়, কিছু জানাতে পারে, প্রভাবিত করে বা আনন্দ দেয়, তাহলেই সেটা মানুষকে পাবলিকলি জানান, নতুবা নয়।
৫। শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়াঃ বক্তাদের প্রতি শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া বা অভিমতই বক্তার প্রকৃত মূল্যায়ন। আপনার শ্রোতারা কারা এবং তারা আপনাকে নিয়ে যা ভাবছে বা বলছে তা থেকেই নিজের মান বা কোয়ালিটি সম্পর্কে আপনি বুঝতে পারবেন।
এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত এবং আমি বিশ্বাস করি এর থেকে ব্যতিক্রম হতেই পারে। সুতরাং যারা বক্তা বা ট্রেইনার হতে চান তারাও এই বিষয়গুলো বিবেচনা করলে উপকৃত হতে পারবেন এবং আপনারা যারা শ্রোতারা আছেন, তারাও একটু ভেবে দেখবেন এবং আমাদেরকে আপনার নিজস্ব মতামতগুলো জানাবেন।
Photo credit: Yousuf Tushar
No comments